প্রকাশিত: Mon, Mar 18, 2024 12:38 AM
আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 7:47 PM

[১]দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের গুণগত মান ক্ষুণ্ন হয়েছে: এনডিআই ও আইআরআই

এম এম লিংকন: [২] ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) টেকনিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট মিশনের (টিএএম) সদস্যরা ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দিন এবং আগে-পরে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ কথা জানায়। 

[৩] রোববার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, এই নির্বাচনে আগের তুলনায় শারীরিক এবং অনলাইন সহিংসতা কম হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে প্রাথমিকভাবে দেশব্যাপী কার্যকর নির্বাচনী প্রতিযোগিতার অনুপস্থিতির কারনে এবং দেশের নিরাপত্তায় সরকারের বাড়তি নজর দেয়ায়। 

[৪] তবে, রাষ্ট্র, শাসক দল, এবং বিরোধীদের সহিংসতা, রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সহিংসতা, নাগরিক স্বাধীনতার সংকোচন, এবং বাক স্বাধীনতা ও সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতার অবনতির কারনে দ্বাদশ নির্বাচনের গুণগত মান ক্ষুন্ন হয়েছে বলে এই প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা দুইটি। 

[৫] রোববার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুই নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা এনডিআই এবং আইআরআই পৃথক পৃথকভাবে তাদের সাইটে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ২৯ পৃষ্ঠার কারিগরি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এমন তথ্যই তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনে নির্বাচনের নানা দিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

[৬] এতে এনডিআই’র এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মনপ্রীত সিং আনন্দ বলেন, এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের ভবিষ্যতে আরও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য একটি মূল্যবান রোডম্যাপ হিসেবে অবদান রাখবে। অহিংস রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল, সরকার এবং নাগরিক সমাজসহ সামাজিক-রাজনৈতিক পরিমণ্ডল জুড়ে নেতাদের নির্বাচনী রাজনীতির নিয়ম, অনুশীলন এবং নিয়মগুলির সংস্কার করার প্রয়োজন রয়েছে।

[৭] আইআরআই’র এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক জোহানা কাও বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা নাগরিকদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে একটি প্রধান প্রতিবন্ধক। বাংলাদেশের নির্বাচনকে পুরোপুরি অংশগ্রহণমূলক করতে হলে সব পক্ষকে অহিংস রাজনীতিকে প্রাধান্য দিতে হবে।

[৮] এই প্রতিবেদনে বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী সহিংসতার বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। ভবিষ্যতে নির্বাচনে সহিংসতার ঝুঁকি প্রশমন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আইআরআই ও এনডিআই’র তুলনামূলক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, সরকারের নির্বাহী ও আইন বিভাগ, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীজনদের কাছে সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

[৯] এতে আরো উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশে অবস্থানকালে টিএএম-এর স্বীকৃত দুই আন্তর্জাতিক সংস্থার পাঁচজন দীর্ঘমেয়াদী বিশ্লেষক নির্বাচন ও সরকারি কর্মকর্তা, নিরাপত্তা কর্মী, রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে রাজনৈতিক দলের নেতা, সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের সংগঠনসহ যুবক, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। 

[১০] এই মিশনটি একটি যৌথ প্রাক-নির্বাচনী মূল্যায়ন মিশন (পিইএএম) অনুসরণ করে যা এনডিআই এবং আইআরআই ৮ থেকে ১১ অক্টোবর, ২০২৩ পর্যন্ত পরিচালনা করেছিল। পিইএএম-এর পর্যবেক্ষণে কারিগরি মূল্যায়নের কাঠামো ও পরিধি সম্পর্কে অবহিত করা হয়, যা বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এবং ২০০৫ সালে জাতিসংঘে অনুমোদিত আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণের নীতিমালার ঘোষণাপত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল।

[১১] আইআরআই এবং এনডিআই নির্দলীয়, বেসরকারী সংস্থা যা বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং অনুশীলনকে সমর্থন ও শক্তিশালী করে। ইনস্টিটিউটগুলো গত ৩০ বছরে ৫০টিরও বেশি দেশে সম্মিলিতভাবে ২০০টিরও বেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব